আর মাত্র একটি ধাপ পেরোতে পারলেই ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চ—চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। ২০১৫ সালের পর যেখান থেকে ছিটকে আছে বার্সেলোনা, আর যেখানে ২০২৩ সালে পৌঁছেও শিরোপার মুখ দেখেনি ইন্টার মিলান। এবার সেই সেমিফাইনালের মঞ্চে মুখোমুখি ইন্টার এবং বার্সা।
প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠে দুই দলের উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই শেষ হয়েছে ৩-৩ গোলে। ফিরতি লেগ আজ অনুষ্ঠিত হবে ইন্টারের ঘরের মাঠ সান সিরোতে। সমতায় থাকা স্কোরলাইন যতটা না পার্থক্য গড়েছে, তার চেয়েও বড় পার্থক্য গড়তে পারে বার্সার বিস্ময়বালক লামিনে ইয়ামালের উপস্থিতি।
প্রথম লেগেই গোল করেছেন ইয়ামাল, আর সেই গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে কিলিয়ান এমবাপ্পের পর দ্বিতীয় কিশোর খেলোয়াড় হিসেবে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েছেন তিনি। এ মৌসুমে ১৭ বছর বয়সেই তার গোলসংখ্যা ছয়। বয়স বিশ হওয়ার আগেই এক মৌসুমে ছয় বা ততোধিক গোল করা খেলোয়াড়দের তালিকায় তিনি চতুর্থ—এমবাপ্পে, রাউল ও হলান্ডের সঙ্গে।
ইয়ামালের ঝলক রয়েছে শুধু গোলেই নয়। তাঁর ৪৪টি শট, ১৯টি লক্ষ্যে থাকা শট এবং ৭৮টি সফল ড্রিবল চ্যাম্পিয়নস লিগে টিনএজারদের মধ্যে রেকর্ড গড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আজকের ম্যাচে তাকে আটকানোই ইন্টারের প্রধান ট্যাকটিক্যাল লক্ষ্য।
ইন্টার ডিফেন্ডার বাস্তোনি জানিয়েছেন, আগের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়ামালের সঙ্গে দেখা হলেও এখনকার ইয়ামাল সম্পূর্ণ আলাদা, ‘তাকে আগেও দেখেছি, কিন্তু এখন সে যে মানের খেলা দেখাচ্ছে, তা অভাবনীয়।’
বাস্তোনির কথায়, ‘তার বয়স, সাহস আর বল পায়ে জাদু দেখানোর ক্ষমতা মিলে সে এখন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। আমরা আবারও তাকে ডাবল, এমনকি ট্রিপল মার্ক করব। তবে অতিরিক্ত মনোযোগও বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ বার্সেলোনা মানে শুধু ইয়ামাল নয়।’
আজকের ম্যাচকে এনবিএ ফাইনালের সপ্তম ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করেছেন ২৬ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান ডিফেন্ডার। বলেছেন, ‘এটা ৫০-৫০ ম্যাচ। ঘরের মাঠে খেলা আমাদের বড় সুবিধা। দর্শকেরা আমাদের জাগিয়ে তোলে। আমরা স্বপ্ন দেখছি, এবং সেই স্বপ্ন পূরণের একেবারে কাছে এসেছি।’
ইন্টার কোচও একমত এই পরিকল্পনার সঙ্গে। তাঁর মতে, ‘ইয়ামালকে বল না দেওয়া গেলে ভালো, কিন্তু আধুনিক ফুটবলে সেটা অসম্ভব। সে যেভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিটি মুহূর্তেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তাই আমাদের রক্ষণে তার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা আছে, ডাবল মার্ক অবশ্যই থাকবে।’
এখন প্রশ্ন একটাই—ইন্টার তাদের এই ‘ইয়ামাল ঠেকাও ফর্মুলা’ দিয়ে সত্যিই কি আজ রাতের সান সিরোতে তাকে থামাতে পারবে? উত্তরের জন্য অপেক্ষা গোটা ফুটবলবিশ্বের।