বিশ্ব ফুটবলের আর্থিক দিক থেকে দুই পরাশক্তি, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটি, এবার মৌসুম শেষে পারফরম্যান্সের বিচারে ‘ফ্লপ শো’ উপহার দিলেও স্কোয়াডমূল্যে তারা রয়েছে শীর্ষে। মাঠে প্রত্যাশা মেটাতে না পারলেও ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি ফুটবল ক্লাবের তালিকায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা।
ম্যানচেস্টার সিটির জন্য ২০২৪–২৫ মৌসুমটি হতাশার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ চারে থাকা নিশ্চিত করতে বাকি তিন ম্যাচে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে নকআউট পর্বেই, আর লিগ কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে চতুর্থ রাউন্ডে। একমাত্র শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা এখন আছে এফএ কাপেই, যেখানে তারা ১৭ মে ফাইনালে ওয়েম্বলিতে মুখোমুখি হবে ক্রিস্টাল প্যালেসের।
অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। লা লিগায় তারা বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে, হাতে আছে চারটি ম্যাচ। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপে ফাইনালে উঠেও শিরোপা অধরা রয়ে গেছে। মৌসুমের শুরুতে তারা জিতেছে শুধু উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ।
এই দুই ক্লাবের পারফরম্যান্সে ফুটবলপ্রেমীরা প্রশ্ন তুলতেই পারেন—বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্লাব হয়েও তারা মাঠে কেন ব্যর্থ? বাংলাদেশের রসিক দর্শকরা হয়তো পুরনো একটি বিজ্ঞাপনের কথাকে উল্টে বলবেন, “দামে ভালো, মানে কম।”
ট্রান্সফারমার্কেটের তথ্য বলছে, ২৮ জন খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত সিটির স্কোয়াডের মূল্য ১৩১ কোটি ইউরো (প্রায় ১৮ হাজার ৫৭ কোটি টাকা), গড় বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি ৬৬ লাখ ইউরো করে। অন্যদিকে, ২৪ জন খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত রিয়াল মাদ্রিদের স্কোয়াডের মোট মূল্য ১২৭ কোটি ইউরো (প্রায় ১৭ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা), গড় বাজারমূল্য ৫ কোটি ৩০ লাখ ইউরো। সংখ্যায় কম হলেও রিয়ালের খেলোয়াড়দের গড় মূল্য সিটির চেয়ে বেশি।
সবচেয়ে দামি ১০ ক্লাবের তালিকায় শীর্ষ তিনে রয়েছে আরও একটি ইংলিশ ক্লাব—আর্সেনাল। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠা দলটির স্কোয়াডমূল্য ১১৩ কোটি ইউরো, খেলোয়াড়দের গড় বাজারমূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ ইউরো।
এই তালিকায় ইংলিশ ক্লাবগুলোর আধিপত্য স্পষ্ট—শীর্ষ দশের মধ্যে ছয়টি ক্লাবই ইংল্যান্ডের: ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, লিভারপুল, চেলসি, টটেনহাম ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। জার্মানি থেকে আছে বায়ার্ন মিউনিখ, ফ্রান্স থেকে পিএসজি এবং স্পেন থেকে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ।
তবে, চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেললেও ইন্টার মিলান এ তালিকায় জায়গা পায়নি। ১১তম স্থানে রয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
এই বাস্তবতায় বোঝা যাচ্ছে, টাকা দিয়ে সবকিছু কেনা গেলেও, মাঠের সাফল্য নিশ্চিত করা যায় না।