সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের পূর্ব মুহূর্তে তাঁর ফ্লাইট থেকে দুইজন কেবিন ক্রুকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ সময় সোমবার (৫ মে) খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ২০২ ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরবেন। এই ফ্লাইটের জন্য পূর্বনির্ধারিত দুই কেবিন ক্রু—আল কুবরুন নাহার কসমিক ও মো. কামরুল ইসলাম বিপোন—কে শুক্রবার (২ মে) মধ্যরাতে আকস্মিকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বিমান সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কসমিক ও বিপোনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং ভিআইপি যাত্রীর নিরাপত্তা ঝুঁকির অভিযোগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগের পক্ষ থেকে ফ্লাইটের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছিল:
-
চিফ পার্সার: নিশি
-
ফ্লাইট পার্সার: আল কুবরুন নাহার কসমিক
-
ফ্লাইট পার্সার: মো. কামরুল ইসলাম বিপোন
-
জুনিয়র পার্সার: রিফাজ
তবে গভীর রাতে সিদ্ধান্ত পাল্টে আল কুবরুন ও বিপোনের পরিবর্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ফ্লাইট পার্সার ডিউক ও ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস আনহারা মারজানকে।
গোয়েন্দা তথ্যে কী ছিল?
সূত্র বলছে, আল কুবরুন নাহার কসমিক অতীতে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার ফ্লাইট পরিচালনা করতেন এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি নানান কারণে ১৮ বার কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন এবং একাধিকবার গ্রাউন্ডেডও হয়েছেন।
অন্যদিকে, কামরুল ইসলাম বিপোন সরকারি দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী বলে গোয়েন্দা তথ্যে দাবি করা হয়েছে। তিনি প্রতি বছর ১৫ আগস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানান, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করেন এবং বিমানে শেখ রাসেল দিবস পালনের উদ্যোক্তাও ছিলেন।
ফ্লাইটে কারা থাকছেন?
রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় (৪ মে) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে বিজি ২০২ ফ্লাইট। এতে খালেদা জিয়া ছাড়াও তাঁর পরিবারের সদস্য ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা থাকবেন।
উল্লেখযোগ্য দিক:
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষত যখন একজন ভিআইপি যাত্রী ও রাজনৈতিক নেতার ফ্লাইটের নিরাপত্তা ও পরিবেশ নিয়ে এমন বিতর্ক দেখা দেয়।
এই ঘটনাকে অনেকেই সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে একটি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন।