শরীরের কোনো অংশে হঠাৎ আঘাত লাগলে বা দীর্ঘদিন ধরে চলা ব্যথায় ভুগলে অনেকে দ্বিধায় পড়েন—গরম সেঁক দেবেন, না কি বরফ চেপে ধরবেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যথার ধরন বুঝে সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ করলেই মিলবে আরাম।
হঠাৎ আঘাতের ক্ষেত্রে প্রথম ২৪ ঘণ্টা বরফ ব্যবহার করাই সবচেয়ে উপকারী। বরফ চূর্ণ করে কাপড়ে মুড়ে আঘাত পাওয়া স্থানে ১০ মিনিট চেপে ধরে রাখতে হয়। প্রয়োজনে এক-দুই ঘণ্টা পরপর একইভাবে আবার বরফ দেওয়া যায়। বরফের কিউব না থাকলে চূর্ণ বরফের বিকল্প হিসেবেই তা ব্যবহার করা যায়। এই সময় কোনো উষ্ণতা দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। তাপ প্রয়োগ করলে আঘাতের স্থান ফুলে যেতে পারে বা রক্তপাত বাড়তে পারে।
প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত স্থানটি নাড়াচাড়া না করে বরং সম্ভব হলে উঁচু করে রাখা উচিত। যদি ব্যথা বেশি হয় কিংবা আঘাত গুরুতর হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যথানাশক ও অন্যান্য চিকিৎসা নিতে হবে। ব্যথা কমে যাওয়ার পর এবং রক্তপাতের ঝুঁকি না থাকলে ধীরে ধীরে আক্রান্ত অংশ নাড়াচাড়া শুরু করা যেতে পারে। তখন উষ্ণতা প্রয়োগের কথাও ভাবা যায়।
অন্যদিকে, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা—যেমন ঘাড়, কোমর বা হাঁটুর ব্যথা—উপশমে গরম সেঁক কার্যকর। গরম পানির ব্যাগ বা বৈদ্যুতিক হিটিং প্যাড ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সরাসরি গরম বস্তু কখনোই ত্বকে ব্যবহার করা উচিত নয়। অবশ্যই কাপড়ের আস্তরণ দিয়ে গরম সেঁকের ব্যবস্থা নিতে হবে। দিনে দুইবার ১৫ মিনিট করে সেঁক দেওয়া নিরাপদ।
গরম পানির তোয়ালে ঘাড়ে পেঁচিয়ে রাখলেও উপকার মেলে। ব্যায়ামের আগে হালকা গরম সেঁক দিলে ব্যথা কমে আসে। তবে ব্যায়ামের পর যদি ব্যথা বেড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে বরফের সেঁক দিয়ে প্রশমিত করা যেতে পারে।
উপসংহারে বলা যায়, ব্যথার ধরন বুঝে ঠান্ডা বা গরম সেঁকের প্রয়োগ হলে উপশম দ্রুত হয়। তবে অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা যন্ত্রণা বাড়াতে পারে—সুতরাং সঠিক জ্ঞান ও সতর্কতা অপরিহার্য।