আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আসতে পারে স্বস্তির খবর। বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে যেখানে করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তা ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। এর ফলে একজন করদাতা ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় কর ছাড়ের আওতায় পেতে পারেন।
এমন প্রস্তাবের পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সাধারণ মানুষের স্বস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য। সংশ্লিষ্ট এক কর কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যয়ের চাপে রয়েছে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়ালে সেই চাপ কিছুটা হলেও লাঘব পাবে।
জানা গেছে, আগামী ২ জুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে নতুন বাজেট। এটি বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেট হিসেবে বিবেচিত হবে। এই বাজেটে শুধু করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোই নয়, করহারের পরিসীমাতেও কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।
বর্তমানে করমুক্ত সীমা অতিক্রমের পর প্রথম এক লাখ টাকা আয়ে ৫ শতাংশ কর আরোপ হয়। এই স্তরের পরিধি কিছুটা বাড়ানো হতে পারে, যদিও করের হার অপরিবর্তিত রাখার সম্ভাবনাই বেশি। বর্তমানে ব্যবহৃত করহার ধাপগুলো হলো ৫, ১০, ১৫, ২০ ও ২৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য, গত দুই অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমায় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে করমুক্ত সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছিল। অথচ এর পরের সময়গুলোতে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখীই থেকেছে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতি গত এক বছর ধরে ছিল অত্যন্ত চড়া। ২০২৪ সালের মার্চ থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১০ মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের ওপরে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।