বৈশাখের শুরুতেই গাছে গাছে আম পাকতে শুরু করে। তবে আম কেবল পাকা হলেই নয়, কাঁচা অবস্থাতেও এর রয়েছে অনন্য স্বাদ ও পুষ্টিগুণ। কেউ পাকা, রসালো, মিষ্টি আম খেতে পছন্দ করেন, আবার কেউবা কাঁচা আমের টক এবং তাজা স্বাদে মুগ্ধ হন।
এই বিষয়ে পুষ্টি বিজ্ঞানে অভিজ্ঞ এক অনার পদবিধারী বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, কাঁচা এবং পাকা—উভয় প্রকার আমেরই রয়েছে নিজস্ব উপকারিতা।
কাঁচা আমের গুণাগুণ:
কাঁচা আমে থাকে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি, যা পাকা আমের তুলনায় বেশি। এই ফলটি তুলনামূলকভাবে বেশি অ্যাসিডিক হওয়ায় হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, নিয়মিত মলত্যাগ নিশ্চিত করে এবং অন্ত্রের সুস্থ মাইক্রোবায়োম রক্ষায় সহায়তা করে।
এছাড়া, কাঁচা আমে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং কোলাজেন উৎপাদনেও সহায়তা করে। এর অ্যাসিডিক প্রকৃতি পাচক এনজাইম তৈরিতে সহায়তা করে, যা খাদ্য ভাঙতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞ আরও জানান, কাঁচা আম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-নিরোধী উপাদানে সমৃদ্ধ। এর ফলে এটি ক্যান্সার ও হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে।
পাকা আমের গুণাগুণ:
পাকা আমে উচ্চমাত্রার বিটা-ক্যারোটিন ও অন্যান্য ক্যারোটিনয়েড থাকে, যা ফলটিকে তার স্বাভাবিক কমলা-হলুদ রং প্রদান করে। এই উপাদানগুলো কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। ক্যারোটিনয়েডসমূহ বয়সজনিত চোখের সমস্যা ও নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়ক।
পাকা আম ভিটামিন এ-এর অন্যতম উৎস। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে এবং ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এতে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকায় এটি দ্রুত শক্তি জোগায় এবং মিষ্টির চাহিদা পূরণ করে।
কাঁচা এবং পাকা—উভয় আমেরই রয়েছে স্বতন্ত্র পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। খাদ্যতালিকায় এই দুই ধরনের আম অন্তর্ভুক্ত করলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নিশ্চিত করা যায়।