গ্রীষ্মের তীব্র গরমে শরীর যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনি পেটের নানা সমস্যাও দেখা দেয়। অ্যাসিডিটি, পেটফাঁপা, ডায়রিয়া কিংবা ফুড পয়জনিং—এই সময়ে এসব সমস্যা যেন নিয়মিত সঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই গরমে পেট সুস্থ রাখা সম্ভব।
অতিরিক্ত গরমে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে, যা পেটের সমস্যার অন্যতম বড় কারণ। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি খাওয়া হলেও তা ঘামের মাধ্যমে দ্রুত শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। পানি কম খাওয়ার ফলে খাবার হজমে সমস্যা দেখা দেয়, তৈরি হয় কোষ্টকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি। তাই শরীরকে সবসময় আর্দ্র রাখার চেষ্টা করা উচিত।
অনেকে গরমে ঠান্ডা পানীয় বা খাবার খেয়ে একটু প্রশান্তি পেতে চান। কিন্তু বাইরে থেকে এসে সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম বা ঠান্ডা জুস খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই কারণে ঠান্ডা কিছু খেতে চাইলে কিছুটা সময় অপেক্ষা করা ভালো। দই, ঘরে তৈরি লাচ্ছি বা মালাই খাওয়া যেতে পারে বিকল্প হিসেবে।
রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া শরবত, জুস বা কুলফির প্রতি গরমে অনেকেরই আগ্রহ বাড়ে। কিন্তু এসব খাবার তৈরি হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, যা ডায়রিয়া বা আমাশয়ের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। এ সময় বাইরের খাবার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা উচিত।
গরমে অনেক সময় তেষ্টা পেটে ভরা অনুভব করায় অনেকে নিয়মিত খাবার খান না। কিন্তু এই অনিয়ম পেটের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে। তিনবেলা নিয়ম করে খাবার খাওয়া পেট সুস্থ রাখার জন্য জরুরি।
শুধু খাবার নয়, সূর্যের তীব্র তাপ থেকেও নিজেকে রক্ষা করা প্রয়োজন। গরমে সূর্যের তাপ শরীরে প্রদাহ তৈরি করে, যা হজম প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলে এবং পেটের সমস্যার সৃষ্টি করে।
এই সময় পেট সুস্থ রাখতে মৌসুমি ফল খাওয়া যেতে পারে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, বেল বা বাঙির মতো ফল হজমে সহায়ক। এসব ফলের রস পানিশূন্যতা দূর করতেও কার্যকর।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—শরীর ও পেটের যত্নে ঘরে তৈরি হালকা, কম তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া। অতিরিক্ত তেল ও ঝাল গরমে শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
এই গ্রীষ্মে নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত পানি পান করুন, ঘরে তৈরি খাবার খান এবং ঠান্ডা খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমান। সচেতন থাকলে গরমেও পেট থাকবে শান্ত ও সুস্থ।