চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই (জুলাই থেকে মার্চ) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৩২১ কোটি মার্কিন ডলার। যা বিগত পুরো অর্থবছরে পরিশোধ করা মোট অর্থ—৩৩৭ কোটি ডলারের প্রায় সমান। অর্থাৎ, মাত্র ৯ মাসেই আগের অর্থবছরের ঋণ পরিশোধের মাত্রা প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে সরকার।
আজ বুধবার বিকেলে প্রকাশিত এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়, যা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) প্রস্তুত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঋণের বোঝা ও পরিশোধের গতি দুই-ই বেড়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে মোট ৪৮১ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে। এই সময়ে ঋণের সুদ ও আসল মিলে পরিশোধ করতে হয়েছে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অর্থ, যা অর্থপ্রাপ্তির তুলনায় বেশ ভারী একটি পরিমাণ।
পরিশোধের এই ৩২১ কোটি ডলারের মধ্যে আসল বাবদ পরিশোধ হয়েছে ২০১ কোটি ডলার এবং সুদ বাবদ ১২০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে সরকার ২৫৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে এবারে ৬৪ কোটি ডলার বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।
অন্যদিকে, জুলাই-মার্চ সময়ে বিদেশি সহায়তার প্রতিশ্রুতি কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। চলতি সময়ে ৩০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রতিশ্রুতি মিলেছে, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি ছিল ৭২৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এবার প্রতিশ্রুতি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি।
ঋণ ছাড়ের দিক থেকেও কিছু সংস্থা এগিয়ে রয়েছে। সর্বোচ্চ ঋণ দিয়েছে এডিবি—১২২ কোটি ডলার। এর পরে রয়েছে বিশ্বব্যাংক ১০৭ কোটি ডলার এবং জাপান ৮৯ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে এই সময়ের মধ্যে।
এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, দেশের ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে, কিন্তু নতুন সহায়তার প্রবাহ আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। যা ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে।